রূপচর্চায় কিভাবে গোলাপ জল ব্যবহার করব - গোলাপ জল বানানোর নিয়ম

রূপচর্চায় কিভাবে গোলাপজল ব্যবহার করব আমরা হয়তো জানি না । গোলাপজল দিয়ে কত রকম উপায় রূপচর্চা করা যায় আসুন জেনে নেই। গোলাপ জল ব্যবহার করে নিজেকে কিভাবে সুন্দর করা যায় ও গোলাপজল বানানোর নিয়ম।

গোলাপ জল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

প্রিয় পাঠক রূপচর্চায় গোলাপজলের ব্যবহার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গোলাপ জল দিয়ে অনেক রকম উপায় নিজেকে সুন্দর করা যায় । তখন সুন্দর রাখা যায় আমার এই পোস্টটিতে আমি তুলে ধরেছি গোলাপ জল দিয়ে কিভাবে রূপচর্চা করবেন।

পোস্ট সূচিপত্র রূপচর্চায় কিভাবে গোলাপ জল ব্যবহার করব - গোলাপ জল বানানোর নিয়ম

গোলাপ জল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় 

সাধারণত, গোলাপজল একটি প্রাকৃতিক উপকরণ যা ত্বকের জন্য ভাল। আপনি একটি ক্লিন কাপড়ে গোলাপজল সামান্য ভিজিয়ে মুখ ও গলা অঞ্চলে মৃদু ভাবে ঘষে নিতে পারেন। এটি ত্বককে সতেজ ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে। তবে মনে রাখবেন, কোন বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ না করে শুধু সামান্য গোলাপজল প্রয়োগ করা উচিত।

আরো পড়ুনঃ সিজারের পর পেটের মেদ কমানোর উপায়

গোলাপজলের এই প্রাকৃতিক উপকারিতার বাইরে যেতে হলে অন্য রাসায়নিক উপাদানের প্রয়োজন হতে পারে, যা আমি সুপারিশ করতে পারব না। আশা করি এই সামান্য পরামর্শ উপকারী হবে। বেশ, আমি গোলাপজল দিয়ে ফর্সা হওয়ার একটি সাধারণ উপায় তুলে ধরছি। তবে মনে রাখবেন যে এটি একটি পুরনো পদ্ধতি এবং এর দীর্ঘস্থায়ী ফলাফল সম্পর্কে আমার নিশ্চয়তা নেই।

  • প্রথমে, আপনার মুখ ভালভাবে ধুয়ে নিন এবং পরিষ্কার করুন। 
  • এরপর, গোলাপজলে ভিজানো একটি নরম কাপড়/তোয়ালে দিয়ে মুখ ও গলার অঞ্চল সম্পূর্ণভাবে ঘষে নিন। এটে করতে হবে একটু জোরালোভাবে যাতে ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়তে পারে।
  • এরপর থেকে দিন ১০-১৫ মিনিট যাতে ত্বকে গোলাপজল শুকিয়ে যায়। এই সময়ে মুখে কিছু না লাগান।
  • শেষে, গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন এবং স্বাভাবিক মুখোষধ/মসৃণতা ক্রিম প্রয়োগ করুন।

এই প্রক্রিয়াটি দিনে ১/২ বার করতে পারেন। ধৈর্য ধরে কয়েকসপ্তাহ এভাবে চালিয়ে গেলে ফর্সা ত্বক পাওয়া যেতে পারে। তবে স্মরণ রাখবেন যে এটি পুরাতন পদ্ধতি এবং মডার্ন ত্বক পরিচর্যা নীতিগুলোর সাথে যেতে পারে না। যদি কোন সমস্যা হয়, তাহলে এটি বন্ধ করে দিন।

ব্রণ দূর করতে গোলাপ জলের ব্যবহার

গোলাপজল একটি প্রাকৃতিক উপাদান যাগোলাপজল একটি ভাল প্রাকৃতিক টোনার হিসাবে ব্যবহার করা যায়। এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বককে পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যবান রাখতে সাহায্য করে। টোনার হিসাবে গোলাপজল ব্যবহারের কিছু উপায় নিম্নরূপঃ

  • মুখ ধৌত করার পর কটন বলে গোলাপজল ভিজিয়ে মুখে প্রলেপ দিন। এটে করলে ত্বকের অতিরিক্ত তৈল ও আবর্জনা দূর হবে।
  • পরিষ্কার মুখে গোলাপজল স্প্রে করুন। এতে ত্বক তাজা ও উজ্জ্বল থাকবে। 
  • বদিতে ১ চামচ গোলাপজল মিশিয়ে মিস্ট স্প্রের তৈরি করুন এবং দিনে কয়েকবার মুখে ছিটিয়ে দিন।
  • গোলাপজল ও হাইড্রোজেন পারোক্সাইড মিশিয়ে ত্বক টোনার তৈরি করুন। ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করে এটি ব্যবহার করুন।
  • মধু ও গোলাপজল মিশিয়ে নাইট টোনার তৈরি করুন। এটি রাতে মুখে লাগিয়ে ঘুমোন।

গোলাপজল টোনার ব্যবহার করলে ত্বক সুন্দর, সতেজ ও পরিপাটি থাকবে। তবে অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে প্যাচ টেস্ট করে নিন। মাঝে মাঝে অন্য কোন টোনারের সাথে বদল করে নিতে পারেন। ব্রণ দূর করতে সাহায্য করতে পারে। এটি এন্টি-ইনফ্লেমেটরি ও এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদানসমৃদ্ধ। ব্রণ দূর করার জন্য গোলাপজল ব্যবহারের কিছু উপায় নিম্নরূপ:

রূপচর্চায় কিভাবে গোলাপ জল ব্যবহার করব - গোলাপ জল বানানোর নিয়ম

গোলাপজল টনার: একটি কটন বলে গোলাপজল ভিজিয়ে ব্রণের উপর ফুটো মারুন। এটি ব্রণের প্রদাহ কমাতে এবং পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে। দিনে কয়েকবার করতে পারেন।

গোলাপজল ফেস মাস্ক: গোলাপজল ও টক দুধে মিশিয়ে ফেস মাস্ক তৈরি করুন। ১৫-২০ মিনিট রেখে পরে খুব ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের প্রদাহ কমাবে এবং ব্রণ দূর করতে সাহায্য করবে।

গোলাপজল ভাপ: গরম পানিতে গোলাপজল মিশিয়ে ভাপ নিন। এটি ত্বকের মধ্যে থাকা আবর্জনা বের করে দিতে সাহায্য করবে এবং ব্রণ সারাতে সহায়ক হবে।  

গোলাপজল তরল সাবান: শুকনো ত্বকের জন্য গোলাপজল ও মধু মিশিয়ে সাবান তৈরি করা যায়। এটি ত্বককে পরিষ্কার করবে এবং নরম রাখবে।

নিয়মিত গোলাপজল ব্যবহার ত্বকের প্রদাহ ও ব্রণ দূর করতে সহায়তা করবে। তবে যদি ব্রণ খুব বেশি হয় বা জটিল হয়ে পড়ে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

টোনার হিসেবে গোলাপ জলের ব্যবহার

গোলাপজল একটি ভাল প্রাকৃতিক টোনার হিসাবে ব্যবহার করা যায়। এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বককে পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যবান রাখতে সাহায্য করে। টোনার হিসাবে গোলাপজল ব্যবহারের কিছু উপায় নিম্নরূপঃ

  • মুখ ধৌত করার পর কটন বলে গোলাপজল ভিজিয়ে মুখে প্রলেপ দিন। এটে করলে ত্বকের অতিরিক্ত তৈল ও আবর্জনা দূর হবে।
  • পরিষ্কার মুখে গোলাপজল স্প্রে করুন। এতে ত্বক তাজা ও উজ্জ্বল থাকবে। 
  • বদিতে ১ চামচ গোলাপজল মিশিয়ে মিস্ট স্প্রের তৈরি করুন এবং দিনে কয়েকবার মুখে ছিটিয়ে দিন।
  • গোলাপজল ও হাইড্রোজেন পারোক্সাইড মিশিয়ে ত্বক টোনার তৈরি করুন। ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করে এটি ব্যবহার করুন।
  • মধু ও গোলাপজল মিশিয়ে নাইট টোনার তৈরি করুন। এটি রাতে মুখে লাগিয়ে ঘুমোন।

গোলাপজল টোনার ব্যবহার করলে ত্বক সুন্দর, সতেজ ও পরিপাটি থাকবে। তবে অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে প্যাচ টেস্ট করে নিন। মাঝে মাঝে অন্য কোন টোনারের সাথে বদল করে নিতে পারেন।

গোলাপ জলের ব্যবহার ও উপকারিতা

গোলাপজল একটি প্রাকৃতিক ও উপকারী উপাদান যার বহুমুখী ব্যবহার রয়েছে। এর মূল উপকারিতাগুলো হলো:

১. ত্বক পরিচর্যায় উপকারিতা:

এন্টি-ইনফ্লেমেটরি ও এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান সমৃদ্ধ হওয়ায় ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।

  • ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।  
  • ত্বকের তৈল নিয়ন্ত্রণ করে এবং ব্রণ দূর করতে সহায়তা করে।
  • ত্বকের রূক্ষতা দূর করে এবং নরম ও সতেজ রাখে।

২. স্বাস্থ্যগত উপকারিতা:

  • এন্টি-অক্সিডেন্ট ঘটক রয়েছে যা শরীরের ক্ষতিকারক ফ্রি রেডিকেল দূর করে।
  • আঘাত বা জ্বালা প্রশমিত করতে সহায়তা করে।
  • হজমশক্তি বাড়ায় এবং অ্যাসিডিটি হ্রাস করে। 
  • মানসিক চাপ কমায় এবং শান্তি আনে।

৩. অন্যান্য ব্যবহার:

  • চুল ও scalp পরিচর্যায় ব্যবহার করা যায়।
  • গৃহস্থালীতে এয়ার ফ্রেশনার হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
  • খাবার ও পানীয়ে স্বাদ যোগ করা যায়।
  • ধ্যান ও যোগাভ্যাসে ব্যবহৃত হয়।

এভাবে দেখা যায়, গোলাপজল একটি প্রাকৃতিক, নিরাপদ ও বহুমুখী উপাদান যা স্বাস্থ্য, সৌন্দর্য ও আরামদায়ক জীবনযাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

গোলাপ জলের অপকারিতা

গোলাপ জলের মূলত কোনো ক্ষতিকর প্রভাব নেই। তবে কিছু বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার অতিরিক্ত পরিমাণে গোলাপ জল পান করলে পেটব্যথা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া হতে পারে। প্রতিকিয়া কিছু লোকের শরীরে গোলাপ জলের প্রতি এলার্জি বা অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে যেমন ছোঁয়াচ, চুলকানি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

অমাইলের পরিমাণ গোলাপের ফুল থেকে প্রস্তুত গোলাপ জলে সামান্য পরিমাণেও অমাইল উপস্থিত থাকে। অমাইল শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তবে পরিমিত পরিমাণে তা বিপদজনক না। অশুদ্ধতা কিছু অশুদ্ধ বা মিশ্রিত গোলাপ জলে ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকতে পারে।

আরো পড়ুনঃ পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় 

সুতরাং, প্রয়োজনমত ছোট পরিমাণে, শুদ্ধ ও গুণগত মানসম্পন্ন গোলাপ জল ব্যবহার করলে তা নিরাপদ। তবে বেশি পরিমাণে বা অনিয়মিত ব্যবহার এড়িয়ে চলাই ভাল।

শীতে গোলাপ জলের ব্যবহার

শীতকালে গোলাপ জলের ব্যবহার বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে:

  • ত্বক পরিচর্যা: গোলাপ জল শুষ্ক ত্বক পরিচর্যায় বহুল ব্যবহৃত হয়। শীতে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্কতা ও খসখসে হওয়ার সমস্যা থাকে। গোলাপ জল ব্যবহার করলে ত্বককে নরম ও আর্দ্র রাখতে পারে।
  • মাথাব্যথা প্রশমন: গোলাপ জল শীতলকারী ও ঘ্রাণশক্তি বৃদ্ধিকারী। শীতকালে মাথাব্যথা বা সর্দি-কাশির সময় গোলাপ জল ঘ্রাণ করলে উপশম পাওয়া যায়।
  • চুলের স্বাস্থ্য: শীতে চুল খসখসে ও শুষ্ক হতে পারে। গোলাপ জল চুলকে নরম এবং চকচকে রাখতে সাহায্য করে।
  • শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্য: শীতকালে গোলাপ জলের বাষ্প গ্রহণ করলে শ্বাসনালী পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে।
  • মানসিক প্রশান্তি: গোলাপের সুগন্ধ মানসিক শান্তি ও স্বস্তি বৃদ্ধি করে। শীতকালীন দুঃখজনক মানসিক অবস্থায় গোলাপ জলের সুগন্ধ উপকারী।

তবে প্রচুর পরিমাণে গোলাপ জল গ্রহণ করা উচিত নয়। সতর্কতা অবলম্বন করে, পরিমিত পরিমাণে ব্যবহার করলে শীতকালে গোলাপ জল বিভিন্ন উপকারিতা প্রদান করে।

গরমে গোলাপ জলের ব্যবহার

গ্রীষ্মকালে গোলাপ জলের ব্যবহার বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছেঃ

জ্বালাপোড়া প্রশমন: গোলাপ জলের শীতল ও জ্বালানাশক গুণ রয়েছে। গরমে শরীরের জ্বালাপোড়া প্রশমনে গোলাপ জল ব্যবহার করা হয়।

সানবার্ন প্রতিরোধ: গোলাপ জলে ইয়ন্ট্রি-অক্সিডেন্ট গুণ থাকায় গরমে রৌদ্রতাপে সনটান এড়াতে সাহায্য করে। প্রলেপ হিসাবেও গোলাপ জল ব্যবহার করা যায়।

ঘামাতি প্রশমন: গোলাপ জল শরীরকে শীতল রাখতে সহায়তা করে এবং ঘামাতি কমাতে পারে।

ত্বক পরিচর্যা: শুষ্ক ত্বককে গোলাপ জল নরম ও আর্দ্রতা প্রদান করে। গরমে ত্বক কালচে ও খসখসে হলে গোলাপ জলের স্প্রে ব্যবহার করা যায়।  

মাথাব্যথা প্রশমন: গরমের মাথা ধরা বা মাথাব্যথায় গোলাপ জল ঘ্রাণ করলে উপশম পাওয়া যায়।

মানসিক প্রশান্তি: গরমে মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়, গোলাপ জল ব্যবহারে উপশম পাওয়া যায়। 

তবে গরমের সময় অতিরিক্ত গোলাপ জল ব্যবহার করা উচিত নয়। পরিমিত পরিমাণে ব্যবহার করলে গরমের সময় উপকারিতা পাওয়া যায়।

কিভাবে গোলাপজল ব্যবহার করে ত্বক সুন্দর রাখা যায় 

ত্বক সুন্দর রাখতে গোলাপ জলের ব্যবহার নিম্নরূপে করা যায়:

গোলাপ জল টনার হিসেবে ব্যবহার করা যায়: 

  • প্রতিদিন স্নানাদি শেষে মুখ ও গর্দান ভাল করে পরিষ্কার করে গোলাপ জল দিয়ে টোন করুন।
  • এটি ত্বককে ফ্রেশ ও নরম রাখবে এবং অতিরিক্ত তেল দূর করবে। 


গোলাপ জল মিষ্ট করুন:

  • একটি স্প্রে বোতলে গোলাপ জল ও কয়েক ফোঁটা গোলাপী তেল মিশিয়ে মিষ্ট তৈরি করুন। 
  • শুকনো ত্বকে এই মিষ্টটি স্প্রে করে ময়েশ্চারাইজ করুন।
  • এটি ত্বককে সারাদিন নরম ও আর্দ্র রাখবে।


 গোলাপ জলের মাস্ক প্রয়োগ করুন:

  • গোলাপ জল এবং কিছু মধু মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করুন।
  • সপ্তাহে 1-2 বার এই প্যাক প্রয়োগ করে 15-20 মিনিট রেখে দিন।
  • ফলে ত্বক উজ্জ্বল ও নরম হবে।

রং কমাতে গোলাপ জল ব্যবহার করুন:
  • গোলাপ জল ভিনেগার মিশিয়ে প্রয়োগ করলে রঙীন দাগ কমাতে সাহায্য করবে।

সুতরাং নিয়মিত ও সঠিকভাবে গোলাপ জলের ব্যবহার করলে ত্বক সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান থাকবে।

গোলাপ জলের ব্যবহার বিধি

গোলাপ জলের ব্যবহার বিধি নিম্নরূপ:

১. ফেস টোনার হিসেবে:

  • ত্বক পরিষ্কার করার পর গোলাপ জল দিয়ে মুখ ও গলা টোন করুন।
  • এটি ত্বককে পরিষ্কার, নরম ও সজীব রাখবে।

২. ময়েশ্চারাইজার হিসেবে: 

  • গোলাপ জলে কিছু গোলাপী তেল মিশিয়ে স্প্রে বোতলে রাখুন।
  • শুষ্ক ত্বকে এই মিশ্রণ স্প্রে করে ময়েশ্চারাইজ করুন।

৩. ফেস মাস্ক হিসেবে:

  • গোলাপ জল ও মধু মিশিয়ে একটি ফেস প্যাক তৈরি করুন।
  • সপ্তাহে 1-2 বার এই প্যাক লাগিয়ে 15-20 মিনিট রেখে দিন।

৪. বডি মিষ্ট হিসেবে:

  • গোলাপ জল ও গোলাপী তেল মিশিয়ে বডি মিষ্ট তৈরি করুন।
  • শরীরে স্প্রে করে ব্যবহার করুন।

৫. হেয়ার মিষ্ট হিসেবে:

  • গোলাপ জল ও গোলাপী তেল মিশিয়ে হেয়ার মিষ্ট তৈরি করুন।
  • চুলে স্প্রে করুন, ফলে চুল নরম ও সুগন্ধি হবে।

৬. রঙের দাগ দূর করতে:

  • গোলাপ জল ও সিরকা মিশিয়ে দাগে লাগান।
  • কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন, রঙের দাগ দূর হবে।

গোলাপ জলকে যথাযথভাবে এইসব উপায়ে ব্যবহার করলে ত্বক, চুল ও শরীর সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান থাকবে।

মুখের মুখের দাগ দূর করতে গোলাপ জলের ব্যবহার

মুখের দাগ দূর করতে গোলাপ জলের ব্যবহার করা যায়। গোলাপজল টোনার ব্যবহার করলে ত্বক সুন্দর, সতেজ ও পরিপাটি থাকবে। তবে অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে প্যাচ টেস্ট করে নিন। মাঝে মাঝে অন্য কোন টোনারের সাথে বদল করে নিতে পারেন। এজন্য কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়:

  • গোলাপ জল ও সিরকা দিয়ে স্ক্রাব তৈরি করুন
  • একটি বাটিতে গোলাপ জল ও সিদ্রা বা এপ্পেল সিডি ভিনেগার মিশিয়ে নিন, অনুপাত ১:১ 
  • এতে কিছু চামচ লবণ যোগ করুন
  • এই মিশ্রণ দিয়ে মুখের দাগযুক্ত অংশগুলো স্ক্রাব করুন কয়েক মিনিট
  • এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন
  • গোলাপ জল ও দই দিয়ে প্যাক বানান  
  • আধা কাপ দই এবং ১/৪ কাপ গোলাপ জলের সাথে কিছু লবণ মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন
  • মুখে এই প্যাক লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন
  • ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন
  • গোলাপ জল ও লেবু রস দিয়ে টোনার তৈরি করুন
  • গোলাপ জল ও লেবু রসের সমান অনুপাত নিয়ে মিশ্রণ করুন
  • কটন বলে ভিজিয়ে মুখে লাগান
  • কয়েক মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন

দাগ দূর করতে গোলাপ জলের ব্যবহার

নিয়মিত এইসব পদ্ধতিতে গোলাপ জলের ব্যবহার করলে ক্রমশ মুখের দাগ কমতে শুরু করবে। ধৈর্য ধরে প্রয়োগ করতে হবে কিছুদিন।

গোলাপ জল বানানোর নিয়ম 

গোলাপ জল বানানোর নিয়ম নিম্নরূপ:

প্রথম পদ্ধতি (জল দিয়ে):
১। প্রথমে স্বচ্ছ ও তাজা গোলাপ ফুল সংগ্রহ করুন। যতটা সম্ভব ফ্রেশ ফুল ব্যবহার করবেন।

২। ফুলগুলোর পাপড়ি ও ডাঁটা অংশ সরিয়ে নিন। শুধুমাত্র পাপড়িগুলো রাখুন।

৩। একটি পাত্রে পানি উত্তাপ দিন। খুব গরম করার প্রয়োজন নেই, চা বানানোর মতো উষ্ণতা যথেষ্ট।

৪। পাত্রে সাবধানে গোলাপের পাপড়িগুলো রাখুন। যথেষ্ট পরিমাণ পাপড়ি ব্যবহার করবেন যাতে জল রঙিন হয়ে ওঠে।

৫। পানি থেকে নামিয়ে রেখে দিন যাতে গোলাপের গন্ধ ও রং জলে মিশে যায়। প্রায় ৩০ মিনিট থেকে দিতে হবে।

৬। জল ঠাণ্ডা হলে ছেঁকে বা কাপড় দিয়ে ছাকিয়ে পাপড়িগুলো আলাদা করে নিন। এখন গোলাপ জল তৈরি হয়ে গেছে।

দ্বিতীয় পদ্ধতি (ভাপ দিয়ে):
১। একটি পাত্রে জল নিন এবং উপরে একটি ছেঁকে বা ঝাঁঝরি রাখুন। 
২। পাত্রের জলে গোলাপের পাপড়িগুলো ভরে দিন।
৩। পাত্রের মুখ বন্ধ করে জল উত্তপ্ত করুন। গরম ভাপ গোলাপের রং ও গন্ধ বের করবে।
৪। ছেঁকে বা ঝাঁঝরিতে জমা গোলাপ জল সংগ্রহ করুন।


উভয় পদ্ধতিতেই গোলাপ জল শেষ হলে ঠাণ্ডা রাখতে হবে। একটু লবণ যোগ করলে জল দীর্ঘদিন সংরক্ষিত থাকবে। এভাবে পরিষ্কার ও স্বাভাবিক গোলাপ জল তৈরি করা যায়। প্রয়োজনে কোন প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা যাবে।

লেখকের মন্তব্য

রূপচর্চায় কিভাবে গোলাপজল ব্যবহার করব আমরা রূপচর্চা করার জন্য পার্লারে কতই না টাকা খরচ করে থাকি। এবং সঠিক নিয়ম জানি না বাজার থেকে কেমিক্যাল যুক্ত ক্রিম মুখে ইউজ করি ফলে আমাদের অনেক ক্ষতি হতে । পারে প্রাকৃতিকভাবে রূপচর্চাটাই সবচাইতে ভালো পদ্ধতি। গোলাপজল বানানোর নিয়ম ও শিখবো আমরা এই পোস্টটিতে।

প্রিয় পাঠক আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনি জানতে পারবেন গোলাপ জল দিয়ে কত রকম উপায়ে নিজেকে সুন্দর করা যায় । এবং গোলাপজল কিভাবে বানাবেন কিভাবে তৈরি করে আপনি আপনার মুখে লাগাবেন সেটা কত রকমের উপায় আমি সেটা আমার এই পোস্টে তুলে ধরেছি । আশা করি আপনি আমার এই পোস্টটি পড়ে উপকৃত হবেন । আপনি যদি আমার এই পোস্টে করে উপকৃত হন তাহলে আপনার বন্ধুদের কাছে অবশ্যই শেয়ার করে দিবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি অনলাইন স্মার্ট এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url