ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম - আপেল সিডার ভিনেগার কি ফ্রিজে রাখতে হয়

ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম আসুন আজকে আমরা জেনে নেই। ভিনেগার খেয়েও যে ওজন কমানোর যায় ও আপেল সিডার ভিনেগার কি ফ্রিজে রাখতে হয় সেই সম্বন্ধে আজকে আমি আমার এই পোস্টে তুলে ধরেছি।

আপেল সিডার ভিনেগার কতদিন খাওয়া যায়

আমরা হয়তো অনেকেই জানি না ভিনেগার কি এবং ভিনেগার কিভাবে খেতে হয় আমার এই পোষ্টের মধ্যে ভিনেগার খাওয়ার সমস্ত নিয়ম তুলে ধরেছি সবকিছু জানতে আমার এই পোস্টটি সম্পন্ন পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্র ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম - আপেল সিডার ভিনেগার কি ফ্রিজে রাখতে হয়

ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম

আপেল সিডার ভিনেগার ওজন কমানোর জন্য কার্যকরী একটি উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি সাহায্য করতে পারে অ্যানরেক্সিক এবং ক্ষুধামন্দা নিয়ন্ত্রণে। তবে স্বাস্থ্যবান উপায়ে ওজন কমানোর জন্য আপেল সিডার ভিনেগারকে একটি পুরক হিসেবে দেখা উচিত। প্রতিদিন নিয়ম করে যদি আপনি আপেল সিডার ভিনেগার খান তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার ওজন কমাতে পারবেন । 

আপিল সিডার ভিনেগার খেলেই যে ওজন কমে যাবে বিষয়টা এমন না আপনাকে ভিনেগার খাওয়ার সাথে সাথে যথেষ্ট পরিমাণে ব্যায়াম করতে হবে। এবং সয়াবিন তেল খাওয়া যাবে না বাইরের ফাস্টফুড খাবার খাওয়া যাবে না ডুবো তেলে ভাজা কোন খাবার খাওয়া যাবে না । প্রতিদিন আপনাকে কমপক্ষে ৪০ মিনিট হাঁটতে হবে কারণ এই এক্সারসাইজ আপনার হাটা শরীরের জন্য খুবই উপকারী । 

তাই বলে আমি বলছি না যে আপনি ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ ছাড়া ওজন কমাইতে পারবেন না বিষয়টা হচ্ছে আপনি যদি ভিনেগার খাওয়ার সাথে সাথে এগুলো আরও মেনটেন করে চলেন তাহলে দ্রুত ওজন কমে যাবে। আপনার নিয়মিত খাদ্য মাসের সাথে কিভাবে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার খাবেন সেটার কিছু নিয়ম আমি নিচে দিয়ে রাখলাম।

  • প্রতিদিন 1-2 চামচ আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়া উচিত। আরও বেশি পরিমাণ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • আপেল সিডার ভিনেগারকে আধ গ্লাস পানি বা অন্য কোনো তরল পানীয়ের সাথে মিশিয়ে খান। এটি দাঁত এবং অম্লাশয়ের ক্ষতি রোধ করবে।
  • খাবারের আগে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়া ভাল কারণ এটি ক্ষুধা কমিয়ে খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
  • অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার যেমন শাকসবজি, ডাল, ফল ইত্যাদি সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করুন।
  • নিয়মিত শারীরিক কর্মকান্ড যেমন হাঁটা, ব্যায়াম ইত্যাদি করুন।
  • পানি প্রচুর পরিমাণে পান করুন।
  • অতিরিক্ত চিনি, ভাত এবং অপুষ্টিকর খাবার এড়িয়ে চলুন।

স্মরণ রাখবেন, ওজন কমানোর জন্য একটি সমগ্র পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত শারীরিক কর্মকান্ড অবলম্বন করা জরুরি। আপেল সিডার ভিনেগার শুধুমাত্র একটি সহায়ক উপাদান। ভিনেগারের সাথে অবশ্যই আপনি ডায়েট করবেন ব্যায়াম করবেন বা প্রতিদিন ৪০ মিনিট কমপক্ষে হাঁটবেন দেখবেন আপনার ওজন খুবই দ্রুত কমে গেছে।

আপেল সিডার ভিনেগার কি ফ্রিজে রাখতে হয়

ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম  আপেল সিডার ভিনেগার কি ফ্রিজে রাখতে হয় না আপেল সিডার ভিনেগারকে ফ্রিজে রাখার প্রয়োজন নেই। বরং ঠান্ডা, অন্ধকার এবং শুষ্ক জায়গায় রাখা উচিত। ফ্রিজে রাখলে এর গুণাগুণ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আপেল সিডার ভিনেগার রাখার জন্য কিছু টিপস একটি বন্ধ কাঁচের বোতলে রাখুন যাতে বাতাস এবং আলোর সংস্পর্শে না আসে। এতে এর গুণাগুণ দীর্ঘদিন থাকবে।

অন্ধকার এবং ঠান্ডা জায়গায় যেমন কাপবোর্ডের ভিতরে রাখুন। অতিরিক্ত তাপ ও আলো এর গুণগত মান নষ্ট করে। যদি বোতল খুলে রাখেন, তাহলে সেটি ফ্রিজে রাখুন না, বরং রাখুন রান্নাঘরের শেল্ফে। ফ্রিজের অতিরিক্ত শীতলতায় এর স্বাদ ও গুণাগুণ নষ্ট হতে পারে। সব থেকে ভাল হল নতুন বোতল ব্যবহার করা এবং প্রয়োজনমতো খুলে ব্যবহার করা।

মেয়াদোত্তীর্ণ হলে ফেলে দিন। সাধারণত আপেল সিডার ভিনেগার 5-10 বছর ব্যবহারযোগ্য থাকে যদি ভালভাবে সংরক্ষণ করা হয়। সুতরাং, আপেল সিডার ভিনেগার ফ্রিজে না রেখেই তা দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় যদি প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা হয়।

আপেল সিডার ভিনেগার কতদিন খাওয়া যায়

আপেল সিডার ভিনেগারের মেয়াদ অনেকটাই নির্ভর করে এর সংরক্ষণ পদ্ধতি এবং উৎপাদনের তারিখের উপর। তবে সাধারণভাবে আপেল সিডার ভিনেগার দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায় ভিনেগারটা অনেকদিন আপনি খেতে পারবেন । কিন্তু আপনাকে অবশ্যই যত্ন করে রাখতে হবে ঠান্ডা এবং শুষ্ক জায়গায় কিভাবে খাবেন বা কিভাবে যত্ন করে রাখবেন নিম্নে কিছু তথ্য দেয়া হলো।

খোলা বোতল

যদি আপেল সিডার ভিনেগারের বোতলটি খোলা থাকে এবং সঠিকভাবে সংরক্ষিত হয়, তাহলে আনুমানিক 6 মাস থেকে 1 বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যেতে পারে। খোলা বোতলটিকে ঠান্ডা, অন্ধকার জায়গায় রাখুন এবং সম্ভব হলে ফ্রিজে রাখুন।

বন্ধ বোতল

একটি বন্ধ বোতল আপেল সিডার ভিনেগার সাধারণত 3 বছর থেকে 5 বছর পর্যন্ত ব্যবহারযোগ্য থাকে।  
বন্ধ বোতলটি ঠান্ডা এবং অন্ধকার জায়গায় রাখলে এর মেয়াদ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন যে প্রাসঙ্গিক ভিনেগার আসলেই একেবারে নষ্ট হয় না। তবে সময়ের সাথে এর স্বাদ, গন্ধ এবং রাসায়নিক গুণাবলী ক্রমশ কমতে থাকে। সুতরাং, যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয়, তাহলে আপেল সিডার ভিনেগার 1 বছরেরও বেশি সময় ব্যবহার করা যায়। তবে মেয়াদ পেরিয়ে গেলে এর গুণগত মান কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আপেল সিডার ভিনেগার কি কিডনির ক্ষতি করে

সাধারণভাবে আপেল সিডার ভিনেগার সঠিকভাবে ব্যবহৃত হলে এটি কিডনির জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে এটি কিডনির উপর কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে। অ্যাসিড লোড (Acid Load) আপেল সিডার ভিনেগার এসিডিক স্বভাবের। অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে এটি শরীরের অ্যাসিড লোড বাড়াতে পারে। কিডনিগুলি এই অতিরিক্ত অ্যাসিডকে নিষ্কাশিত করার চেষ্টা করে, যা কিডনিতে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম - আপেল সিডার ভিনেগার কি ফ্রিজে রাখতে হয়

ক্রোনিক কিডনি ডিজিজ (CKD) যারা ইতোমধ্যেই ক্রোনিক কিডনি রোগে ভুগছেন তাদের জন্য অতিরিক্ত আপেল সিডার ভিনেগার গ্রহণ উচিত নয়। কারণ এটি অ্যাসিডিক লোড বাড়িয়ে কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। কিডনি পাথর আপেল সিডার ভিনেগারের অ্যাসিড পরিবেশ শরীরে কিছু ধরণের কিডনি পাথর তৈরির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

তবে, প্রতিদিন 1-2 চামচ মাত্রায় গ্রহণ করলে এবং পর্যাপ্ত পানি পান করলে সাধারণ মানুষের কিডনির জন্য আপেল সিডার ভিনেগার বিপজ্জনক নয়। শুধু কিডনি সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এটি গ্রহণ করা উচিত। সুতরাং, সঠিকভাবে ব্যবহৃত হলে আপেল সিডার ভিনেগার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় বা বিশেষ রোগ অবস্থায় এটি সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার সময়

ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হল খাবারের আগে অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে খাবারের আগে আপেল সিডার ভিনেগার খেলে ক্ষুধা কমে এবং খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এটি ওজন কমানোর জন্য সহায়ক। ভোরবেলা সকালে খালি পেটে 1-2 চামচ আপেল সিডার ভিনেগার খেলে দিনভর মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায় বলে মনে করা হয়। এটি শরীরের কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট মেটাবলিজম উন্নত করে।

ব্লাড সুগার কন্ট্রোলের জন্য খাবারের সময় আপেল সিডার ভিনেগার গ্রহণ করলে ব্লাড সুগারের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এটি ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপকারী। রাতে ঘুমানোর আগে আপেল সিডার ভিনেগার খেলে প্রদাহ এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্স রোগের লক্ষণ কমতে পারে।

পরপর কিছুক্ষণ পর যদি একসাথে বেশি পরিমাণ আপেল সিডার ভিনেগার গ্রহণ করতে না পারেন তাহলে এটি কিছুক্ষণ পরপর খাওয়া যেতে পারে। তবে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার আগে এটি পানি বা অন্য কোন তরল পদার্থে মিশিয়ে খাওয়া উচিত। শুধু গ্রহণ করলে এটি দাঁতের এনামেল এবং ক্ষতি করতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণেও এটি গ্রহণ করা উচিত নয়।

আপেল সিডার ভিনেগারের প্রতিক্রিয়া

আপেল সিডার ভিনেগার সাধারণত নিরাপদ এবং সহনীয়, তবু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এর কিছু প্রতিক্রিয়া হতে পারে। প্রাথমিকভাবে নিম্নোক্ত প্রতিক্রিয়াগুলি দেখা যেতে পারে পেট ব্যথা আপেল সিডার ভিনেগারের অ্যাসিডিক প্রকৃতির কারণে কিছু মানুষের পেটে ব্যথা বা অস্বস্তি হতে পারে। এটি সাধারণত তীব্র না হলেও অস্বস্তিকর অনুভূতি হতে পারে।

দাঁতের ক্ষতি আপেল সিডার ভিনেগারের অ্যাসিডিক স্বভাব দীর্ঘমেয়াদে দাঁতের এনামেলকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এজন্য পানি বা অন্য কোনো তরল দ্রবীর সাথে মিশিয়ে গ্রহণ করা উচিত। গলা জ্বালাপোড়া একই কারণে কিছু লোকের গলায় জ্বালাপোড়া অনুভূতি হতে পারে যদি শুকনো অবস্থায় আপেল সিডার ভিনেগার গ্রহণ করা হয়।

ত্বক প্রতিক্রিয়া কিছু মানুষের ক্ষেত্রে আপেল সিডার ভিনেগার ত্বকে লাল দাগ বা চুলকানি তৈরি করতে পারে। এগুলি সাধারণত হালকা এবং অস্থায়ী প্রকৃতির। ডায়রিয়া বেশি পরিমাণে আপেল সিডার ভিনেগার গ্রহণ করলে কিছু লোকের ডায়রিয়া হতে পারে।

প্রতিক্রিয়াগুলি সাধারণত হালকা থাকে এবং একজন ব্যক্তি আপেল সিডার ভিনেগার গ্রহণের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারলে কমে আসে। তবে যদি প্রতিক্রিয়াগুলি তীব্র হয় তাহলে চিকিত্সক বা পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষত যারা গর্ভবতী, ডায়াবেটিস বা কিডনি সমস্যায় ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে আপেল সিডার ভিনেগার সতর্কতার সাথে গ্রহণ করা উচিত।

আপেল সিডার ভিনেগারের ১৫ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা

ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম  আপেল সিডার ভিনেগারের অনেকগুলো গুণ আছে এটি যেমন ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে তেমন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয় হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ক্যান্সার রোগেও প্রতিরোধ করে ত্বকে আন্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলী বয়সের বিলম্ব তা দূর করে । অনেক রকমের কাজ করে থাকে তার মধ্যে কিছু নিম্নে তুলে ধরা হলো । আপেল সিডার ভিনেগারের 15টি প্রধান স্বাস্থ্য উপকারিতা নিম্নরূপ।

1. ওজন নিয়ন্ত্রণ: এটি ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে ফলে ওজন কমাতে সহায়তা করে।

2. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: আপেল সিডার ভিনেগার গ্লাইসেমিক রেস্পন্স কমায় এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে।

3. কলেস্টেরল কমিয়ে: এটি ভাল কলেস্টেরল বৃদ্ধি এবং খারাপ কলেস্টেরল হ্রাস করতে সাহায্য করে। 

4. অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল: এর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

5. অ্যাসিড রিফ্লাক্স প্রতিরোধ: এটি অম্লাশয়ের পারিপাক সহজতর করে এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের লক্ষণ প্রশমিত করে।

6. হজম শক্তি বৃদ্ধি: আপেল সিডার ভিনেগার হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং কনস্টিপেশন নিরাময়ে সহায়তা করে।

7. স্কিন রোগ প্রশমন: এটি ত্বকের প্রদাহ এবং ফোঁড়া প্রশমিত করতে পারে।

8. ক্যান্সার প্রতিরোধ: এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণ ক্যান্সার সেল প্রতিরোধে সহায়ক।

9. চুল ও নখের স্বাস্থ্য উন্নতি: এটি চুল ও নখের স্বাস্থ্য উন্নত করতে পারে।

10. ভাইরাল ইনফেকশন প্রতিরোধ: এর অ্যান্টি-ভাইরাল গুণাবলী শরীরকে ভাইরাল সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

11. ব্লাড শুগার নিয়ন্ত্রণ: এটি খাবারের পর ব্লাড সু‌গারের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

12. কেশ ঝরা রোধ: এর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি, বি-ভিটামিনস এবং অ্যালফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড কেশ ঝরা রোধ করতে সাহায্য করে। 

13. অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ: এর ফোলেট, লোহা ও ভিটামিন বি12 অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে।

14. ত্বক এজিং বিলম্বিত: এর অ্যান্টি-এজিং এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণাবলী ত্বকের বয়স বৃদ্ধি বিলম্বিত করে।

15. উপবাস রাখতে সহায়তা: এটি ক্ষুধা কমানো ও শরীরের নানা প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। 

এছাড়াও বিভিন্ন গবেষণায় আপেল সিডার ভিনেগারের আরও নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া গেছে। তবে সঠিক পরিমাণে গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার খাওয়ার নিয়ম

আপেল সিডার ভিনেগার উইথ 'মাদার' গ্রহণ করার সময় কিছু নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন। 'মাদার' অংশটি বিশুদ্ধ আপেল সিডার ভিনেগারের নিচে এক ধরনের জমাটবদ্ধ অংশ যা এর পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করে। নিম্নে এর গ্রহণ পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো শুরুতে একবার গ্রহণের পরিমাণ 1-2 চামচ এর বেশি করবেন না। ক্রমে ক্রমে বাড়িয়ে যেতে পারবেন।

আপেল সিডার ভিনেগার সরাসরি না খেয়ে এটি অবশ্যই পানি বা অন্য কোন তরল পানীয় (যেমন ফলের রস) এর সাথে মিশিয়ে খাবেন। এটি দাঁত ও গলার ক্ষতি রোধ করবে। গ্রহণের 20-30 মিনিট আগে ও পরে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। এটি আপেল সিডার ভিনেগারের পটাশিয়াম চাহিদা পূরণ করবে।

খালি পেটে গ্রহণ করা ভাল। তবে যারা অম্ল নিয়ে সমস্যা পান তারা খাওয়ার পরে গ্রহণ করতে পারেন। যদি বমি বা পেট ব্যথা হয়, তাহলে পরিমাণ কমিয়ে নিন বা বন্ধ করে দিন। মাদার' অংশটি মেশানো ভিনেগারকে ঝাঁঝালো করে তোলে। এটি সঠিক নিয়মে মিশিয়ে নিতে হবে।

এটি দীর্ঘদিন ধরে গ্রহণ করলে ভিটামিন বি12 এবং ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে পুরক গ্রহণ করতে হবে। গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মাদের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সুতরাং, আপেল সিডার ভিনেগার উইথ 'মাদার' ভালভাবে গ্রহণ করলে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে অতিরিক্ত বা ভুল পদ্ধতিতে গ্রহণ করলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বাসায় কিভাবে আপেল সিডার ভিনেগার বানাবো

বাসায় আপেল সিডার ভিনেগার তৈরি করা সম্ভব, যদিও এটি একটু জটিল এবং সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। তবুও যদি আপনার ইচ্ছা থাকে তাহলে নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন:

প্রয়োজনীয় উপকরণ:
2-3 টি সুস্বাদু আপেল (যেমন গ্র্যানি স্মিথ বা ফুজি)
1 কাপ চিনি
পরিষ্কার জারের বোতল (1 লিটার বোতল উপযুক্ত)
কাপড় বা মসৃণ চেঁচে
থার্মোমিটার (পরিমাপের জন্য)

প্রণালী

  • আপেলগুলি ধুয়ে নিন এবং কচি অংশগুলি সরিয়ে ফেলুন। আপেলগুলি খোসা না-সরিয়ে কাটুন।
  • কাটা আপেলগুলি বোতলে রাখুন এবং চিনি যোগ করুন।
  • গরম পানি দিয়ে বোতলটি পূরণ করুন। তাপমাত্রা 20-25 ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়া উচিত। 
  • বোতলের মুখে কাপড় বা মসৃণ চেঁচে বাঁধুন যাতে বাতাস চলাচল করতে পারে।
  • এখন বোতলটি রাখুন একটি অন্ধকার, ঠান্ডা জায়গায় (22-25 ডিগ্রি সেলসিয়াস)।
  • প্রতিদিন বোতলটি ঝাঁকানো ও নাড়ানো দরকার যাতে আপেল ও চিনি মিশে যায়।
  • প্রায় 3-4 সপ্তাহের মধ্যে আপেল চিনির মিশ্রণে ফার্মেনটেশন শুরু হবে।
  • যখন ফার্মেনটেশন প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে এবং তরল অংশ আর বাদামী রং ধারণ করবে না, তখন আপেল সিডার তৈরি।
  • অবশিষ্ট অংশগুলি বাদ দিয়ে শুধু তরল অংশটি নিন এবং ভালভাবে ঝাঁকিয়ে নিন।
  • নতুন বোতলে ঢেলে নিন এবং এবার একটি নতুন কাপড়/চেঁচে বেঁধে রাখুন।
  • আরও 4 সপ্তাহ অপেক্ষা করুন, যার মধ্যে প্রক্রিয়াটি পূর্ণ হবে এবং মাদার তৈরি হবে।
  • এখন আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহারের উপযুক্ত। প্রয়োজনে ছেঁকে নিন।

বাসায় কিভাবে আপেল সিডার ভিনেগার বানাবো

মনে রাখবেন,এই প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ সময় নেয়। প্রায় 2 মাস লাগতে পারে। শুধুমাত্র বিশুদ্ধ উপকরণ ব্যবহার করা এবং পরিষ্কার রাখার উপর মনোযোগ দিন। বাজার থেকে প্রস্তুতকৃত ভিনেগার কিনলে অনেক সহজ হবে।

আপেল সিডার ভিনেগার এর দাম কত

আপেল সিডার ভিনেগারের দাম বিভিন্ন ব্র্যান্ড, পরিমাণ এবং কেনার জায়গা অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। তবে সাধারণভাবে বাংলাদেশে আপেল সিডার ভিনেগারের মূল্য নিম্নোক্তভাবে থাকে:

1. ব্র্যান্ডেড আপেল সিডার ভিনেগার
 250 মিলি বোতল: 150-250 টাকা
500 মিলি বোতল: 250-400 টাকা
1 লিটার বোতল: 400-600 টাকা

2. নন ব্র্যান্ডেড লোকাল আপেল সিডার ভিনেগার
250 মিলি বোতল: 80-150 টাকা
500 মিলি বোতল: 150-250 টাকা  
1 লিটার বোতল: 250-400 টাকা

3. বাজার দোকান থেকে লুজ খুচরা মূল্য
   - প্রতি 100 মিলি: 30-60 টাকা

মূল্যগুলি এলাকা, দোকান এবং প্রচলিত বাজারমূল্য অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে। উচ্চমানের অর্গানিক আপেল সিডার ভিনেগার এবং বিদেশি ব্র্যান্ডের মূল্য আরও বেশি হতে পারে। যেহেতু আপেল সিডার ভিনেগার একটি পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ পণ্য, তাই গুণগত মানের দিক বিবেচনা করে মূল্য নির্ধারণ করা ভাল। বাজার খুঁজে বেশি দামী না হয়ে সঠিক মূল্যে কিনতে পারেন।

আসল আপেল সিডার ভিনেগার চিনার নিয়ম

আসল আপেল সিডার ভিনেগার চেনার জন্য খেয়াল রাখতে হবে রং আসল আপেল সিডার ভিনেগার হলদেট বা বাদামী রঙের হতে হবে। অতীব পরিষ্কার এবং একরঙা হলে সন্দেহ করা উচিত। নিচে একটি অবসান বা জমাট অংশ থাকা উচিত যাকে মাদার বলা হয়। মাদার ভিনেগারের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করে। গাঢ়ত্ব সঠিক আপেল সিডার ভিনেগার থাকবে গাঢ় এবং টেক্সচারে একটু ঘন। পানি বা অন্য পানীয়ের সাথে মিশ্রিত হলে সহজেই চেনা যাবে।

 স্বাদে এটি তীক্ষ্ণ হবে, তবে গাঢ় আপেলের স্বাদ। অতিরিক্ত অ্যাসিডিক বা প্লাস্টিকের স্বাদ থাকলে নকল বোঝা যাবে। উৎপাদন প্রক্রিয়া প্রক্রিয়াজাত আপেল সিডার ভিনেগার এড়িয়ে চলুন। প্রাকৃতিক ফার্মেন্টেশন দ্বারা তৈরি ভিনেগার নির্বাচন করা উচিত। বাজার থেকে কেনা আপেল সিডার ভিনেগারের মেয়াদ অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখুন। 

খুব সস্তা এবং অনেক দীর্ঘ মেয়াদি ভিনেগার সন্দেহজনক। তথ্যদানকারীর বিশ্বস্ততা প্রতিষ্ঠিত এবং বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডের ভিনেগার বেছে নিন। শুধুমাত্র আপেল জুস এবং প্রাকৃতিক উপাদান দ্বারা তৈরি ভিনেগার নির্বাচন করুন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ভিনেগারের গুণগত মান। উচ্চমানের আসল আপেল সিডার ভিনেগারই শুধু স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হবে। নকল বা মিশ্রিত ভিনেগার না কিনার চেষ্টা করুন।

লেখক এর মন্তব্য

ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম ও আপেল সিডার ভিনেগার কি ফ্রিজে রাখতে হয় । শুধু এইগুলাই নয় আপেল সিডার ভিনেগারের যতগুলো মাধ্যম রয়েছে এবং কিভাবে খেতে হয় খেলে কি হয় খেলে কি কি উপকার হয় বা কি কি অপকার হয় সম্পূর্ণ তুলে ধরেছি । আমি আমার এই পোষ্টের মধ্যে আপনি যদি আমার এই পোস্টটি পুরো পড়ে থাকেন তাহলে ভিনেগার খাওয়ার মাধ্যম আপনার আর অন্য কোথাও জানা লাগবে না। আশা করছি ভিনেগার খেয়ে আপনি খুব দ্রুত আপনার মেদ বা ওজন কমিয়ে ফেলতে পারবেন । আপনি যদি উপকার পেয়ে থাকেন আমার এই পোস্টটি পড়ে তাহলে আপনি অবশ্যই আপনার বন্ধুর কাছে শেয়ার করে দিবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি অনলাইন স্মার্ট এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url