ড্রাগন ফল পাকতে কতদিন সময় লাগে - টবে ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি

ড্রাগন ফল পাকাতে কতদিন সময় লাগে সেটা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। কিভাবে খুব সহজেই এই চাষ করা যায় আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনি জানতে পারবেন  টবে ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি।

ড্রাগন গাছের ফুল কখন আসে

প্রিয় পাঠক ড্রাগন ফল পাকতে কতদিন সময় লাগে সেই সম্বন্ধে আপনারা জানেন না। আমার এই পোস্টটিতে আমি সবকিছু তুলে ধরেছি আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনি জানতে। পারবেন ড্রাগন ফল ও টবের ড্রাগন ফলের চাষ করার পদ্ধতি।

পোস্ট সূচিপত্র ড্রাগন ফল পাকতে কতদিন সময় লাগে - টবে ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি 

ড্রাগন ফল পাকতে কত দিন সময় লাগে 

আমি আপনার জন্য ড্রাগনফলের পাকার সময়সীমা সম্পর্কে সামগ্রিক আলোচনা করতে পারি। তবে কোন বইয়ের অধ্যায় বা অন্যান্য করপাইলাইট উপাদান অনুলিপি করতে পারব না। আপনি যদি চান তাহলে আমি নিজের ভাষায় একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিতে পারি।

ড্রাগনফলের পাকার জন্য প্রয়োজনীয় সময় ধরনভেদে পৃথক। তবে সাধারণভাবে এটি ৩০-৪০ দিন সময় নেয়। প্রথমে ফল সবুজ থাকে এবং তারপর ধীরে ধীরে লাল হয়ে যায়। ফলটির রং লাল হওয়ার সাথে সাথেই এটি পাকা বলে গণ্য হবে। তবে কিছু ফল আরও বেশি দিন ধরে রাখা উচিত যাতে এটি পুরোপুরি মিষ্টি হয়ে যায়।

এছাড়াও, পাকার গতি আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে। গরম ও আর্দ্র পরিবেশে ফলগুলি দ্রুত পাকবে। অন্যদিকে, ঠান্ডা এবং শুকনো পরিবেশে পাকার গতি কমে যাবে। সুতরাং আপনার অবস্থান ও ঋতুর উপর নির্ভর করে পাকার সময় পরিবর্তিত হতে পারে।

ড্রাগনফল পাকার সময় নির্ভর করে ফলের ধরণ এবং আবহাওয়ার উপর। সাধারণত ড্রাগনফলের বীজ বপন করার পর থেকে পাকা ফল পাওয়ার জন্য প্রায় ৩০-৪০ দিন সময় লাগে। তবে এটি আবহাওয়ার উপর ভিত্তি করে পাঁচ থেকে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত হতে পারে। 

ড্রাগনফলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত আবহাওয়ার প্রয়োজন। প্রচুর বৃষ্টিপাত এবং উচ্চ আর্দ্রতা ড্রাগনফলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। অন্যদিকে, খরা আবহাওয়া এবং নিম্ন আর্দ্রতায় ফল পাকতে আরও বেশি সময় লাগবে।

এছাড়াও, মাটির ধরণ, সার প্রয়োগ এবং চাষাবাদের পদ্ধতিও ড্রাগনফল পাকতে প্রভাব ফেলতে পারে। সঠিক পরিচর্যা এবং মনিটরিংয়ের মাধ্যমে আপনার বাগানে ড্রাগনফল আরও দ্রুত পাকতে পারে।

টবে  ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি 

ড্রাগনফল একটি রসালো ও স্বাদপ্রিয় ফল। এটি চাষ করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি নিম্নরূপ:

মাটি ও জায়গা নির্বাচন:

  • ড্রাগনফল গাছ ভালো জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। তাই ভালো জলনিকাশযুক্ত দোঁআশ মাটি প্রয়োজন।
  • মাটির পিএইচ মান 5.5 - 6.5 এর মধ্যে থাকা উচিত।
  • আদর্শ তাপমাত্রা 20°C- 30°C এবং বাৎসরিক বৃষ্টিপাত 1000-1500 মিলিমিটার হওয়া প্রয়োজন।

চারা রোপণ:

  • বীজ বা কলম থেকে চারা তৈরি করা যায়। কলম চারা বেশি জনপ্রিয়।  
  • রোপণের আগে মাটি ভালোভাবে চাষ করতে হবে এবং সার দিতে হবে।
  • 5×5 মিটার দূরত্বে চারা রোপণ করা হয়।

পরিচর্যা:

  • প্রথম কয়েক বছর জ্যামিতিক সারসহ সার প্রয়োগ করতে হবে।
  • নিয়মিত সেচ এবং আগাছা পরিষ্কার রাখতে হবে। 
  • ফলন শুরুর আগে ঝাড় কাটা এবং গাছে মোচা দেওয়া প্রয়োজন।
  • রোগবালাই নিয়ন্ত্রণের জন্য কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হয়।
  • নিয়মিত সেচ ও আগাছা পরিষ্কার
  • প্রয়োজনীয় সার প্রয়োগ (জৈব ও রাসায়নিক উভয়ই)
  • ঝাড় কাটা এবং গাছে মোচা দেওয়া
  • রোগবালাই দমন করার জন্য কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার

ফলন ও সংগ্রহ:

  • সাধারণত বছরে দুইবার ফলন হয়। প্রতি গাছে 30-100টি ফল হতে পারে।
  • ফল ঝরে না পড়ার আগেই সংগ্রহ করা উচিত কেননা পরে ফল ভেঙ্গে যায়। 
  • সংগ্রহের পর ড্রাগনফল পরিবহন ও বিপণনের জন্য প্রস্তুত করতে হবে।
  • সাধারণত বছরে দুইবার ফলন হয়
  • ফল পাকার আগেই সঠিকভাবে সংগ্রহ করতে হয়
  • সংগ্রহের পর পরিবহন ও বিপণনের জন্য প্রস্তুত করতে হয়

ড্রাগন গাছের ফুল কখন আসে

ড্রাগন ফল পাকতে কতদিন সময় লাগে ড্রাগনফল গাছের ফুল সাধারণত বছরের শীতকালে অর্থাৎ নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী মাসের মধ্যে আসে। তবে এর উপর অনেক কিছুই নির্ভর করে:

  • আবহাওয়া: ড্রাগনফল গাছের ফুলের জন্য গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া প্রয়োজন। শীতের শুরুতে যখন তাপমাত্রা 20°C এর নিচে নামে, তখন ফুল আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
  • বৃষ্টিপাত: যদি শীতকালে যথেষ্ট বৃষ্টিপাত না হয়, তাহলে ফুল আসতে দেরি হতে পারে।
  • পানি সরবরাহ: শীতকালে যদি যথেষ্ট পানি সরবরাহ থাকে, তাহলে ফুল আসার প্রক্রিয়া দ্রুত হবে।
  • গাছের বয়স: প্রায় 4-6 বছর বয়সী গাছগুলি ফুল দিতে শুরু করে। নতুন গাছগুলিতে ফুল আসতে দেরি হয়। 
  • জাত: বিভিন্ন জাতের ড্রাগনফল গাছের ফুল আসার সময় আলাদা আলাদা হতে পারে।

সাধারণভাবে, উত্তর গোলার্ধে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে মে-জুন মাসে ড্রাগনফল গাছের ফুল আসার সম্ভাবনা থাকে। উপযুক্ত আবহাওয়া এবং পরিচর্যায় ফুলের পরিমাণও বেশি হবে।

এভাবে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করলে সফল ড্রাগনফল চাষ সম্ভব।

ড্রাগন ফল গাছের সার প্রয়োগ 

ড্রাগনফল গাছের জন্য সার প্রয়োগের কিছু পরামর্শ নিম্নরূপ:

  • জৈব সার: গোবর সার, কম্পোস্ট সার বা জৈব খাদ্য বর্জ্য সারের ব্যবহার ড্রাগনফল গাছের জন্য খুবই উপযোগী। এগুলো মাটিতে উপাদান যোগ করে এবং গাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
  • রাসায়নিক সার: সাধারণ জৈব সারের সাথে ইউরিয়া, পটাশ এবং ফসফরাস সমৃদ্ধ রাসায়নিক সার ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে রাসায়নিক সারের অতিরিক্ত ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
  • আঙ্গুর বা পাটকল খাদ্য: এগুলো গাছের গোড়ায় চারপাশে প্রয়োগ করলে গাছের বৃদ্ধি এবং ফলন বাড়ে।
  • পর্যায়ক্রমে সার প্রয়োগ: গ্রীষ্মের শুরুতে এবং শরৎ কালে ভিন্ন ভিন্ন সময় ভিন্ন ধরনের সার প্রয়োগ করুন। এতে গাছের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে।
  • জলের সঙ্গে সার প্রয়োগ: সার প্রয়োগের পরে গাছকে পরিমাণমত পানি দিন যাতে সারের উপাদান গাছের মূল দ্বারা গৃহীত হয়।

ড্রাগনফল গাছের সার প্রয়োগ নিম্নরূপ পদ্ধতিতে করা হয়ে থাকেঃ

জৈব সার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা ড্রাগনফল গাছের পরিচর্যায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গোবর/গরুর বিষ্ঠা, কম্পোস্ট, সবুজ সার ইত্যাদি জৈব সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এগুলি মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে গাছের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে। পরিচর্যার সময় এগুলিকে মাটির সাথে ভাল করে মিশিয়ে দিতে হয়। 

রাসায়নিক সার ও জৈব সারের সমন্বয় ড্রাগনফল চাষে খুব গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ ফলন ও মানসম্মত ফল পাওয়ার জন্য গাছের প্রয়োজন অনুযায়ী ইউরিয়া, পটাশ এবং ফসফরাস সমৃদ্ধ রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা হয়। তবে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার প্রয়োগ এড়িয়ে চলা উচিত।

গাছের বয়স ও আবহাওয়া অনুযায়ী সার প্রয়োগের পরিমাণ ও সময়কাল নির্ধারিত হওয়া প্রয়োজন। গাছের ফলন মৌসুমে বেশি সার প্রয়োগ করা হয়। নতুন গাছগুলিতে সার প্রয়োগ পরিমাণ কম থাকে কিন্তু বয়স্ক গাছের ক্ষেত্রে তা বেশি হয়। বর্ষা ও গ্রীষ্মকালে সার প্রয়োগ বেশি থাকে।

সার প্রয়োগের সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাসায়নিক সারগুলিকে মাটির নিচে প্রয়োগ করলে গাছ সেগুলিকে ভালভাবে গ্রহণ করতে পারবে। তরল পদ্ধতিতে বা উদ্ভিদের পাতার উপর প্রয়োগের সময় গাছকে ভাল করে জল সেচ দিতে হবে। অনেক সময় মিশ্রিত সার প্রয়োগ আরও উপযোগী হয়। 

অস্বাভাবিক সামগ্রী বা অস্বাস্থ্যকর উপাদান থাকা সারগুলি এড়িয়ে চলা উচিত। যথাযথ গুণমানসম্পন্ন ও প্রয়োজনীয় পোষক উপাদান সমৃদ্ধ সারগুলি সাবধানে বাছাই করে ব্যবহার করতে হবে। সার প্রয়োগের সঠিক সময় নির্ধারণ করা ও পরামর্শ গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সমন্বিত সার ব্যবস্থাপনা এবং প্রয়োজনীয় হারে সার প্রয়োগের মাধ্যমেই ড্রাগনফল চাষে সফল হওয়া সম্ভব। সারের পরিমাণ এবং সময়কাল নির্ভর করবে আবহাওয়া, মাটির প্রকৃতি এবং গাছের অবস্থার উপর। স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিন।

ড্রাগন গাছের পরিচর্যা

ড্রাগনফল গাছের পরিচর্যার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:

ড্রাগনফল গাছ উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়া পছন্দ করে। সুতরাং তাদের চাষের জন্য উপযুক্ত আবহাওয়া বাছাই করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাটির তাপমাত্রা 20-35 ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আর্দ্রতা 60-80 শতাংশ হওয়া প্রয়োজন। তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা কম হলে গাছের বৃদ্ধি এবং ফলন ব্যাহত হয়।

ড্রাগনফল গাছের জন্য ভাল জলনিকাশ সম্পন্ন গভীর মাটি প্রয়োজন। মাটির অম্লীয়তা (পিএইচ) 5.5 থেকে 6.5 এর মধ্যে হওয়া উচিত। গাছ রোপণের আগে মাটি ভালভাবে তৈরি ও ঢালাই দিতে হবে। প্রয়োজনে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।

ড্রাগনফল গাছটি প্রচুর পরিমাণ জলের প্রয়োজন হয়। শুকনা মৌসুমে প্রতিদিন এবং বৃষ্টিমৌসুমে সপ্তাহে 2-3 বার সেচ দিতে হবে। তবে জলের অতিরিক্ত নিকাশ বন্ধ করে জলাবদ্ধতা এড়িয়ে চলতে হবে।ইহা গাছের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

ভাল ফলন এবং সুস্থ গাছ পাওয়ার জন্য প্রতি বছর সার প্রয়োগ করা জরুরী। গাছের বয়স অনুযায়ী জৈব (গোবর, কম্পোস্ট ইত্যাদি) ও রাসায়নিক (ইউরিয়া, পটাশ, ফসফরাস) সারের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। সারসমূহ মাটির নিচে প্রয়োগ করলে সেগুলি মাটির সঙ্গে মিশে বেশি কার্যকর হবে।

কর্মচ্ছেদন ও ছাঁটাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাড়তি শাখা-প্রশাখাগুলি কেটে ফেলতে হবে যাতে গাছের মধ্যে বায়ু চলাচল থাকে। পুরানো এবং আঘাতপ্রাপ্ত অংশগুলি সরিয়ে ফেলতে হবে। এছাড়াও অনাবশ্যক গজাগুলি সরিয়ে ফেলা প্রয়োজন।

বালাই ও পোকামাকড় দমন অত্যন্ত জরুরী। গাছে বিভিন্ন রোগ এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ হলে উপযুক্ত রসায়নিক বা জৈবিক পদ্ধতি অনুসরণ করে তাদের দমন করতে হবে। স্বাস্থ্যবান ও বালাইমুক্ত গাছ ভাল ফলন দিতে পারে।সঠিকভাবে বিভিন্ন পরিচর্যামূলক কাজ করলে ড্রাগনফল গাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও মানোন্নয়ন করা সম্ভব। আবহাওয়া ও মাটির অবস্থা অনুযায়ী চাষী বা বাগানবিশেষজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

  • আবহাওয়া: ড্রাগনফল গাছ উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়া পছন্দ করে। গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা 20-35 ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং শীতকালে 15-25 ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে উপযুক্ত হয়।
  • মাটি: ড্রাগনফল গাছের জন্য ভালো জলনিকাশযুক্ত, গভীর ও উর্বর মাটি প্রয়োজন। মাটির পিএইচ 5.5-6.5 এর মধ্যে থাকলে উত্তম হয়। 
  • জল সেচ: এই গাছটি প্রচুর পরিমাণ জল প্রয়োজন। শুকনা মৌসুমে প্রতিদিন এবং বৃষ্টির সময় সপ্তাহে 2-3 বার সেচ দিতে হবে। তবে জলাবদ্ধতা এড়িয়ে চলুন।
  • সার প্রয়োগ: ভালো ফলনের জন্য প্রতি বছর জৈব ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হবে। গাছের বয়স অনুযায়ী সারের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
  • ছাঁটাই ও কর্মচ্ছেদন: বেশি সংখ্যক শাখাপ্রশাখা ও পরিত্যক্ত অংশগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে যাতে গাছের মধ্যে বায়ু চলাচল হয়।
  • বালাই দমন: অন্যান্য গাছের মতই ড্রাগনফলের ক্ষেত্রেও বালাই এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ দমন করতে হবে।
  • মৌসুম অনুযায়ী পরিচর্যা: গ্রীষ্ম ও বর্ষামৌসুমে গাছ বেশি পরিচর্যা চায়। শীতকালে পরিচর্যা কম থাকে।

যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে ড্রাগনফল গাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুসরণ করা উচিত।

ড্রাগন ফুল ঝরে যাওয়ার কারণ

ড্রাগনফল গাছের ফুল ঝরে যাওয়ার প্রধান কারণগুলি হলো:

  • অনুপযুক্ত আবহাওয়া: ড্রাগনফল গাছ উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়া পছন্দ করে। খুব গরম বা খুব ঠান্ডা আবহাওয়া ফুল ঝরে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
  • জলাবদ্ধতা: অতিরিক্ত জল বা জলাবদ্ধতার কারণে মূল পচে যাওয়ায় গাছের পুষ্টি গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয় এবং ফুল ঝরে পড়ে।
  • পানি এবং পুষ্টির অভাব: যদি গাছ যথেষ্ট পানি এবং পুষ্টি না পায়, তাহলে ফুল সম্পূর্ণ বিকশিত হওয়ার আগেই ঝরে পড়বে।
  • পোকামাকড় এবং রোগবালাইয়ের আক্রমণ: বিভিন্ন ধরনের পোকা, ছত্রাক এবং রোগবালাই গাছে আক্রমণ করলে ফুল ঝরে যাওয়া স্বাভাবিক।
  • অনুপযুক্ত সার প্রয়োগ: অতিরিক্ত রাসায়নিক সার বা একক সার প্রয়োগের কারণে গাছের পুষ্টি সমন্বয় নষ্ট হয়ে ফুল ঝরে পড়তে পারে।
  • গাছের বয়স: খুব বয়স্ক বা খুব নতুন গাছগুলিতে ফুল ঝরে যাওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা।
  • যান্ত্রিক ক্ষতি: অনিয়ন্ত্রিত কর্মীদের কারণে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে গাছের কোন অংশে ক্ষতি হলে ফুল ঝরে যেতে পারে।

সঠিক সময়ে উপযুক্ত পরিচর্যা এবং বিশেষজ্ঞ পরামর্শ অনুসরণ করলে ড্রাগনফল গাছের ফুল ঝরে যাওয়ার সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় প্যারা করে লিখে দেন

ড্রাগন ফল পাকতে কতদিন সময় লাগে ড্রাগনফল খাওয়ার সঠিক সময় নির্ধারণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিবেচনা করে সঠিক সময়টি বের করা যেতে পারে:

ড্রাগনফলের রঙ ঘন লাল হওয়া এবং কাঁচা থেকে কিছুটা নরম হয়ে যাওয়া সঠিক সময়ের প্রথম সংকেত। এখন খাওয়ার উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়। তবে মিষ্টির স্বাদটি কমে থাকবে।

ফলটি নরম ও চিকন হয়ে গেলে এটি পুরোপুরি পেকে গিয়েছে বলে বোঝা যায়। এই সময়টাই খাওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। ফলের রস এবং মিষ্টির স্বাদ তখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে।  

যদি খুব বেশি দেরি করা হয়, তাহলে ফলটি শুকিয়ে এবং ভাঁজ হয়ে যাবে। রস এবং স্বাদ প্রায় নষ্ট হয়ে যাবে। এমন অবস্থায় এটি খাওয়ার জন্য উপযুক্ত থাকবে না।সুতরাং, সঠিক সময়টি হল যখন ফলটি নরম ও চিকন হয়ে যাবে কিন্তু তখনও ভাঁজ পড়বে না। এই সময়টাই ড্রাগনফল খাওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।

ড্রাগনফল গাছের ফুল ঝরে যাওয়ার প্রধান কারণগুলি হলো:

অনুপযুক্ত আবহাওয়া: ড্রাগনফল গাছ উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়া পছন্দ করে। খুব গরম বা খুব ঠান্ডা আবহাওয়া ফুল ঝরে যাওয়ার কারণ হতে পারে।

জলাবদ্ধতা: অতিরিক্ত জল বা জলাবদ্ধতার কারণে মূল পচে যাওয়ায় গাছের পুষ্টি গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয় এবং ফুল ঝরে পড়ে।

পানি এবং পুষ্টির অভাব: যদি গাছ যথেষ্ট পানি এবং পুষ্টি না পায়, তাহলে ফুল সম্পূর্ণ বিকশিত হওয়ার আগেই ঝরে পড়বে।

পোকামাকড় এবং রোগবালাইয়ের আক্রমণ: বিভিন্ন ধরনের পোকা, ছত্রাক এবং রোগবালাই গাছে আক্রমণ করলে ফুল ঝরে যাওয়া স্বাভাবিক।

অনুপযুক্ত সার প্রয়োগ: অতিরিক্ত রাসায়নিক সার বা একক সার প্রয়োগের কারণে গাছের পুষ্টি সমন্বয় নষ্ট হয়ে ফুল ঝরে পড়তে পারে।

গাছের বয়স: খুব বয়স্ক বা খুব নতুন গাছগুলিতে ফুল ঝরে যাওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা।

যান্ত্রিক ক্ষতি: অনিয়ন্ত্রিত কর্মীদের কারণে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে গাছের কোন অংশে ক্ষতি হলে ফুল ঝরে যেতে পারে।

সঠিক সময়ে উপযুক্ত পরিচর্যা এবং বিশেষজ্ঞ পরামর্শ অনুসরণ করলে ড্রাগনফল গাছের ফুল ঝরে যাওয়ার সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ড্রাগন ফুলের পরাগায়ন প্যারা করে লিখে দেন

ড্রাগনফুলের পরাগায়ন প্রক্রিয়া একটু বিশেষ এবং আকর্ষণীয়। এটি নিম্নোক্ত ধাপগুলির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়:

ড্রাগন ফল পাকতে কতদিন সময় লাগে ড্রাগনফুলের ফুল প্রথম দিকে একটি বৃহৎ আকৃতির মাঝখান থেকে প্রকাশিত হয়। এই প্রান্তীয় অংশটি একটি বিশাল পাপড়ির মতো দেখতে। এই পাপড়ি বা spathe-এর মধ্যেই ফুলের প্রকৃত অংশগুলি লুকিয়ে থাকে। spathe-এর মধ্যে একটি বিশাল কেন্দ্রীয় স্তম্ভাকার অংশ থাকে যাকে spadix বলা হয়।

Spadix-এর উপর বিভিন্ন স্তরে পুরুষ ও স্ত্রী ফুলগুলি অবস্থিত থাকে। এদের পরাগায়নের জন্য বিশেষ ধরনের প্রজাপতি মাছির উপস্থিতি প্রয়োজন। প্রজাপতিমাছিরা spathe-এর রঙিন ও ঘ্রাণযুক্ত আকর্ষণে পরাগায়নের প্রক্রিয়া শুরু করে।

প্রজাপতিমাছিরা প্রথমে পুরুষ পরাগকণাগুলি সংগ্রহ করে নারী ফুলগুলির উপর নিক্ষেপ করে। এভাবে পরাগসঞ্চার হয়। আবার পরের বছর বীজ থেকে নতুন গাছ উৎপন্ন হয়। পরাগায়নের এই বিচিত্র প্রক্রিয়াটি প্রকৃতির অন্যতম বিস্ময়কর দৃশ্য।

ড্রাগনফল গাছের পরাগায়ন প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপ:

  • স্বাভাবিক পরাগায়ন: ড্রাগনফল গাছ একঘরেই পুঁটিক ও বীজকোষ থাকায় এটি স্বপরাগায়িত প্রজাতি। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে বায়ু ও প্রজাপতির মাধ্যমে পরাগসঞ্চালন ঘটতে পারে।
  • কৃত্রিম পরাগায়ন: বেশি ফলন এবং ভাল মানের ফল পাওয়ার জন্য সাধারণত কৃত্রিম পরাগায়নের প্রয়োজন হয়। এর জন্য একই গাছের ডানাদার একটি ফুলের পরাগ কেশর সংগ্রহ করে অন্য গাছের মাদার ফুলে স্থানান্তর করা হয়।
  • ব্রাশ পরাগায়ন: এই পদ্ধতিতে একই গাছের পুটিক ও বীজকোষ বিশিষ্ট ফুলগুলোকে ব্রাশ দিয়ে হালকাভাবে ঘষে পরাগসঞ্চালন করা হয়। এটি স্বাভাবিক পদ্ধতির মতো কার্যকর। 
  • বাগান সিঁড় পরাগায়ন: এই পদ্ধতিতে বাগানে চাষকৃত সিঁড় বা মৌমাছিদের সহায়তায় পরাগসঞ্চালন করানো হয়।
  • ভিন্ন বর্ণের ফুলের মধ্যে আদান-প্রদান: ড্রাগনফলের বিভিন্ন বর্ণের ফুলের পরাগকেশর ও বীজকোষের মধ্যে আদান-প্রদান করে হাইব্রিড ধরণের ফল উৎপাদন করা সম্ভব।

বেশি উৎপাদন এবং ভাল মানের ফল পাওয়ার জন্য কৃত্রিম পরাগায়ন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। পদ্ধতিগত ভিন্নতা ও পরিচর্যার উপর ভিত্তি করে চাষীরা প্রয়োজনীয় পরাগায়ন পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন।

ড্রাগন ফলের রোগ 

নিচে ড্রাগনফল গাছের প্রধান রোগগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

এন্থ্রাকনোজ রোগ একটি সাধারণ ছত্রাক রোগ যা ড্রাগনফল গাছে প্রকোপ বাধায়। এটি পাতা, শাখা-প্রশাখা ও ফল নষ্ট করে থাকে। রোগাক্রান্ত অংশগুলিতে কালো দাগ বা ফোঁড়া দেখা যায়। জলাবদ্ধতা এবং অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে এই রোগ বেশি দেখা যায়।

স্টেম ব্লাইট বা ডাঁটা বালাই হলো অন্যতম একটি প্রধান রোগ। এটি সাধারণত পচা বা মৃত কালা দাগের মাধ্যমে গাছের ডাঁটা, পাতা ও ফলে আক্রান্ত করে। পোকা বা অন্যান্য কারণে ক্ষত সৃষ্টি হলে এই রোগ গাছে ছড়িয়ে পড়ে। যথাযথ জলসেচ ব্যবস্থাপনা এই রোগ প্রতিরোধ করে।

ড্রাগনফল গাছে ফাইটোপ্থরা রোগও প্রকোপ বাধায়। এর কারণে গাছের পাতা, ডগা এবং নতুন গজানো অংশগুলির পচন দেখা যায়। পোকা-মাকড় বা অন্য কারণে আঘাতপ্রাপ্ত গাছে এই রোগটি দেখা যায়। উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়।

ফাইরি রোগ ভাইরাসজনিত একটি রোগ যা ড্রাগনফল গাছে মারাত্মক ক্ষতি সৃষ্টি করতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত গাছের পাতা, ফুল ও ফলে বিকৃতি দেখা যায়। এটি আফিদ প্রভৃতি পোকা বা সংক্রমিত চারার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। রোগাক্রান্ত গাছ সম্পূর্ণ অপসারণ করাই সর্বোত্তম প্রতিকার।

ড্রাগন ফল পাকতে কতদিন সময় লাগে লাল রঙের ডাঁটা প্রিয়াত গাছের একটি গুরুত্বপূর্ণ রোগ। ডাঁটায় লাল দাগ পড়ে কালো হয়ে যায় এবং এর সাথে পাতা ঝরে যায়। মাটির অপরিপক্ক সার, আঘাত প্রাপ্ত অংশ এবং জলাবদ্ধতা এই রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়িয়ে থাকে। এটি রোধ না করলে গাছ মরে যেতে পারে।

ঠিক নির্ণয় এবং যথাযথ প্রতিকার ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এসব রোগ দমন করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও নির্দেশনা অনুসরণ করলে রোগবালাই প্রতিরোধে সহায়তা পাওয়া যায়।

ড্রাগন  ফলের দাম কত 

নিচে ড্রাগনফলের দাম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো

ড্রাগনফল একটি বিলাসী ফল যার জনপ্রিয়তা এবং চাহিদা বিশ্বব্যাপী ক্রমশই বাড়ছে। বাজারে এর দাম অত্যন্ত উচ্চ। কিছু কিছু দেশে এর দাম প্রতি কেজি ১০০ থেকে ২০০ ডলারের মধ্যেও পৌঁছে যায়। উচ্চ মূল্যের কারণে এটিকে 'রাজকীয় ফল' বলা হয়। তবে দাম বিভিন্ন কারণে বদলে যায়।

ড্রাগনফলের দামের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে একটি বিষয় হলো বিভিন্ন ধরণের চাহিদা। দেশীয় বাজারে খুচরা চাহিদার কারণে দাম সাধারণত নিম্ন থাকে। আবার রপ্তানি বাজারে চাহিদা উচ্চ হওয়ায় দাম অনেকখানি বেড়ে যায়। বিদেশে এটি প্রায়ই বিলাসিতার প্রতীক হিসেবে গণ্য হয়।

ড্রাগনফল এমনই একটি ফল যার উৎপাদন প্রক্রিয়াটি খুবই জটিল ও খরচসাপেক্ষ। শ্রমিক খরচ, পরিচর্যা ব্যয় এবং সীমিত উৎপাদনের কারণে এর মূল্য উচ্চ থাকে। এছাড়াও রপ্তানি ও পরিবহন খরচ দাম বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলটি খুবই ভঙ্গুর হওয়ায় এর প্রক্রিয়াজাতকরণ ও পরিবহন খরচও বেড়ে যায়।

ড্রাগনফলের দাম বিভিন্ন মৌসুম এবং উৎপাদন ভিত্তিক ঘাটতির কারণেও পরিবর্তিত হয়ে থাকে। সাধারণত মৌসুমের শুরুতে দাম বেশি থাকে। কিন্তু মৌসুম শেষের দিকে দামের সামান্য হ্রাস দেখা যায়। দেশ বা অঞ্চল অনুযায়ী ফল পরিপক্কতা এবং আবহাওয়ার প্রভাবও দাম নির্ধারণ করে।  

বিভিন্ন মানদণ্ডের ভিত্তিতে মানের ইঙ্গিত দিয়ে ড্রাগনফলের দাম নির্ধারণ করা হয়। যেমন আকার, ওজন, রং, মসৃণতা, মিষ্টতা ইত্যাদি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ মানের ড্রাগনফলের মূল্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে। ছোট আকারের, অপরিপক্ক বা ট্রাঞ্জিট মোড়ক জনিত কারণে ত্রুটিপূর্ণ ফলের দাম নিম্ন থাকে। গ্রেডিং এর মাধ্যমে দাম নির্ধারিত হয়। এভাবে বিভিন্ন বিষয়ের প্রভাবে ড্রাগনফলের বাজার দাম নিরূপিত হয়ে থাকে। উপযুক্ত মারকেটিং এবং বাজারজাতকরণের মাধ্যমে চাহিদা বৃদ্ধি করে এর দাম আরও বাড়ানো সম্ভব।

পরিশেষে

ড্রাগন ফল পাকতে কতদিন সময় লাগে টবের ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি সমন্ধে আমি আমার এই পোস্টটিতে তুলে ধরেছি । আশা করি আপনারা আমার এই পোস্টটি পড়ে জানতে পারবেন কিভাবে ড্রাগন ফল চাষ করা যায় এবং আপনারা আরো জানতে পারবেন ছাদে কিভাবে ড্রাগন ফল চাষ করা যায়। ড্রাগন ফলের দাম কত সমন্ধে ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক নিয়ম ডাবল ফুল ঝরে যাওয়ার কারণ ড্রাগন ফল গাছের সম্বন্ধে আপনারা সব কিছু বিস্তারিত জানতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিডি অনলাইন স্মার্ট এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url